ডিজিটাল মার্কেটিং হলে মূলত ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার বা প্রসার করা। বর্তমানে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বাইরে দূর-দূরান্তে মানুষের সাথে কথা বলতে পারছি এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদেরকে দেখতেও পারছি। আর সাধারনত ইন্টারনেট ব্যবস্থা কে কাজে লাগিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং করাকে বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং।
সহজভাবে যদি বলতে হয় তাহলে, আমরা প্রতিনিয়ত ফেসবুক-টুইটার ইউটিউব এর মত জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করে থাকি এখানে অনেক মানুষ অ্যাক্টিভ থাকেন। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এ এসব সামাজিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট গুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার বা অন্যান্য জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে নিজের ব্যবসার প্রচার বা প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কেন করব?
আপনি ধরুন আপনার একটি পণ্য উৎপাদনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আপনার এই প্রতিষ্ঠানটি যেখানে রয়েছে সেখানকার কিছু লোক বা তার আশপাশের কিছু লোক হয়তো আপনার এ প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে জানছে।কিন্তু দূর-দূরান্তের খুব বেশি লোক হয়তো আপনার এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে জানবে না।
তাহলে আপনার এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার করতে হবে আর এজন্যই আপনাকে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো যেমন ফেসবুক টুইটার ইনস্টাগ্রাম এদের মত ওয়েব সাইটগুলোতে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রচার বা প্রসার করতে হবে। তাহলে আপনি এখান থেকে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে কাস্টমার আপনার ব্যবসার জন্য পাবেন।আর এর মাধ্যমে আপনার ব্যবসার পরিধি ও বাড়বে এবং আপনার কাস্টমার অনেক তৈরি হয়ে যাবে। যা আপনার ব্যবসাটিকে দ্রুত বড় করতে সাহায্য করবে।
বর্তমানে যত বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সবাই কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে তারা তাদের প্রচারণা চালায়। আর এতে করে তারা অনেক সুবিধা পেয়েছে কাস্টমার বাড়ানোর জন্য। তাছাড়া এর মাধ্যমে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আরো অনেক মানুষ চিনবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব?
বর্তমান যুগে ইন্টারনেট এর ব্যবহার অনেক গুন বেড়ে গেছে এবং ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরো কয়েক গুনে বেড়ে যাবে সেটা সহজে অনুমেয়। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপর সকলের গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখব? যে কোন ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণ সেন্টার থেকে অনলাইন বা অফলাইন কোর্স করে অথবা অনলাইনে যে কোন ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব এর মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারেন।
কিভাবে শুরু করবেন ডিজিটাল মার্কেটিং?
অনেকে সাধারণত ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান কিন্তু তাঁরা জানেন না কীভাবে তারা ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন। প্রথমত আপনার পণ্যটি কোন ক্যাটাগরির কাস্টমারদের কাছে চাহিদা সম্পূর্ণ তা বিবেচনা করে সেই অনুযায়ী সঠিক তথ্য বিবেচনা করে আকর্ষণীয় কনটেন্ট মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে।
আর সাধারনত এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে সেলস ফানেল। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এইটি যে বাংলাদেশের ৮০ ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসার প্রচার প্রসারের জন্য সেলস ফানেল ব্যবহার করেন না এজন্য তাদের পণ্য অনেক কম বিক্রি হয়ে থাকে।
সেল ফানেল ব্যবহার করে আপনি আপনার পণ্য বিক্রির পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলতে পারবেন। আপনার সেল ফানেল যখন তৈরি হয়ে যাবে এবার আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি কোন ডিজিটাল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে আপনি আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন এবং এই সম্বন্ধে আপনার ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ:
ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক প্রকারভেদ রয়েছে। নিচে ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয় ৭ টি উপায়-
কনটেন্ট মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং
ইমেইল মার্কেটিং
ওয়েব এনালাইটিক্স
এসএমএস মার্কেটিং
কনটেন্ট মার্কেটিং:
কনটেন্টকে সাধারণত কিং বলা হয়ে থাকে ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য।কথাটা অবশ্যই সত্য। সঠিক আকর্ষণীয় কনটেন্টটি কিন্তু আপনার ব্যবসার প্রসার বাড়াতে অনেকাংশে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
কনটেন্ট হলো সাধারণত কোন একটি পণ্য বিষয়বস্তু কে কেন্দ্র করে ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে তার বর্ণনা করে আকর্ষণীয়ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রকাশ করা।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন :
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্গানিক ট্রাফিক খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। ধরুন আপনি কোন একটি পণ্য নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে রিভিউ দিলেন এবার কোন কাস্টমার যদি গুগলে এসে সেই পণ্য সম্পর্কে জানতে চাই বা সার্চ করে তাহলে ওই সম্পর্কিত পণ্যগুলো আসবে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং:
ইমেইল মার্কেটিং:
এসএমএস মার্কেটিং :
সাধারণত একটা সময় ছিল যখন মানুষ অনেক কম মোবাইল ব্যবহার করত কিন্তু বর্তমানে সবাই মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন। আর আমাদের মোবাইলে প্রতিদিনই কিছু মেসেজ আসে এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব
ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বের কথা বলে শেষ করা যাবে না। কোন ব্যবসার প্রসার যদি ভালোভাবে করতে হয় তাহলে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এর শরণাপন্ন হতে হবে। বর্তমানে এই অনলাইনের যুগে যদি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিধি বাড়াতে হয় তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং করতেই হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনি কাঙ্খিত পরিমাণে গ্রাহক পাবেন আপনার ব্যবসার জন্য। সবচাইতে বড় কথা হলো আপনি এর মাধ্যমে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিকে মানুষের কাছে পরিচিত করে তুলতে পারবেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আপনি নিজেও মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে যেতে পারবেন। তাই অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে বর্তমান সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিধি বাড়াতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব অবশ্যই রয়েছে।
পরিশেষে